২২শে শ্রাবণে কবিগুরুর স্মরণে কিছু কথা
“শেষ বিকেলের আলো হব
যদি দিগন্তে দৃষ্টি মেল
সবুজের ঢেউ ছড়িয়ে দেব
যদি জীবনের পাল তোলো”
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২২শে শ্রাবন সেদিন শ্রাবনের ধারাতে মাটি না ভিজলেও শত শত ভক্তের চোখের জলে ভিজেছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি। সেদিনই বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র বিলীন হয়ে যায় ওই মহাকাশে। আজও বাঙালির মনে একটা ক্ষত রয়ে গেছে এই ২২শে শ্রাবনের জন্য। বাংলা সাহিত্যে ও সমাজে বিশেষ অবদান রেখে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এদিন এই জগৎ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তবু বাঙালির মনে আজও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উজ্জ্বল উপস্থিতি রয়েছে, এবং এই ২২শে শ্রাবন কবিগুরুকে স্মরণ করার একটি বিশেষ দিন।
“গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থ সাহিত্যের জগৎকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম বিশেষ উপহার, যার কারণে ১৯১৩ সালে তিনি হয়ে ওঠেন একমাত্র নোবেলজয়ী বাংলা সাহিত্যিক। শুধু সাহিত্যিক হিসেবে নয়, রবীন্দ্রনাথের অনস্বীকার্য অবদান রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামেও। তিনি ব্রিটিশদের দেওয়া “knighthood” উপাধি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাঘ হত্যাকাণ্ডের পর। রবীন্দ্রনাথের পিতা, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এক মহান দার্শনিক ছিলেন এবং উনি ব্রাহ্ম সমাজের সূচনা করেন। চিত্রকর, নাট্যকর, গীতিকার হিসেবেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির মনে জায়গা করে নিয়েছেন। ওনার অনবদ্য কিছু সৃষ্টি, যেমন সহজ পাঠ, ও শিশু গ্রন্থ আজও আমাদের ছেলেবেলাকে আবদ্ধ করে রেখেছে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় দেশের মানুষকে একত্রিত করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসবের সূচনা করেন।
কবিতার ছন্দের মাধ্যমে উনি আমাদের মনে প্রবেশ করিয়েছেন কিছু বার্তা, যেমন – “নিন্দা করতে গেলে বাইরে থেকে করা যায়, কিন্তু বিচার করতে গেলে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়”
“শ্রাবনের বারিধারা
রোজ বয়ে চলে
চারিদিক ভিজায়েছে
দুচোখের জলে
তোমাতেই শেষ হোক
তোমাতেই শুরু
ভুলিতে কি পারি তবু
তুমি কবিগুরু”